বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জয় দিয়ে সিরিজ শুরুর মধ্যেই ‘নক্ষত্র পতন’ হল শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটে! ওয়ান ডে ক্রিকেটে শেষবার দেশের প্রতিনিধিত্ব করার পর বিদায় বেলায় লসিথ মালিঙ্গা বলেন,‘আমার সময় শেষ এবং আমাকে যেতে হবে৷’
শুক্রবার কলম্বোয় বাংলাদেশকে ৯১ রানে হারায় শ্রীলঙ্কা৷ পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এটাই ছিল মালিঙ্গার শেষ ওয়ান ডে ম্যাচ৷ দেশের এই তারকা ক্রিকেটারকে শেষবার ওয়ান ডে ম্যাচে দেখতে আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম ভরিয়ে ছিলেন দ্বীপরাষ্ট্রের ক্রিকেটপ্রেমীরা৷ ম্যাচে ৩৮ রান খরত করে ৩টি উইকেট তুলে নেন লঙ্কার বছর পঁয়ত্রিরিশের এই ডানহাতি পেসার।
তাঁর আগুনে ওপেনিং স্পেলের দৌলতে ৩১৫ তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ৩৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে বাংলাদেশ৷ শেষ পর্যন্ত ৪১.৪ ওভারে ২২৩ রানে অল-আউট হয়ে যায়। ম্যাচ শেষে মালিঙ্গা জানান,‘আমি মনে করি, ওয়ান ডে থেকে অবসর নেওয়ার আমার এটাই ঠিক সময়। ১৫ বছর ধরে শ্রীলঙ্কার হয়ে খেলছি এবং এবার আমাকে যেতে হবে৷’ অবসরের আগে ওয়ান ডে ক্রিকেটে ৩৩৮টি উইকেট ঝুলিতে পুরেন মালিঙ্গা।
ওয়ান ডে ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক হলেন মালিঙ্গা৷ তাঁর আগে রয়েছেন কিংবদন্তি অফ-স্পিনার মুথাইয়া মুরলীধরন (৫২৩) এবং কিংবদন্তি বাঁ-হাতি পেসার চামিন্ডা ভাস (৩৯৯)৷ টেস্ট ক্রিকেট থেকে আগেই সরে দাঁড়িয়েছিলেন মালিঙ্গা৷ শেষ টেস্ট খেলেছেন ২০১০ কলম্বোর এই স্টেডিয়ামে ভারতের বিরুদ্ধে৷
১৫ বছর ধরে দেশের হয়ে ওয়ান ডে খেললেও মালিঙ্গার টেস্ট কেরিয়ার ছিল মাত্র ৬ বছরের৷ দেশের হয়ে মাত্র ৩০টি টেস্ট খেলেন লঙ্কার এই পেসার৷ টেস্টে তাঁর উইকেটের সংখ্যা মাত্র ১০১টি৷ ওয়ান ডে কেরিয়ারে মালিঙ্গার সেরা সময় ২০০৬ থেকে ২০১৩৷ এই সময়ের ব্যবধানে ২৬৭টি উইকেট নিয়ে দেশের হয়ে সবার আগে ছিলেন তিনি৷ তবে এর মাঝে ১৫ মাস হাঁটুর সমস্যার মাঠের বাইরে ছিলেন মালিঙ্গা৷
দেশের হয়ে শেষ ওয়ান ডে ম্যাচ খেলে উঠে মালিঙ্গা বলেন, ‘কেরিয়ারে সবসময় সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছি৷ দেশের অনেক তরুণ বোলার রয়েছে৷ তবে তাদের নিজেদেরকে মেলে ধরতে হবে৷ দলের ম্যাচ-উইনার হতে গেলে ওদেরকে ম্যাচ-উইনিং স্পেল করতে হবে৷’
ইংল্যান্ডের মাটিতে সদ্যসমাপ্ত ২০১৯ বিশ্বকাপে দেশের হয়ে সাত ইনিংসে ১৩টি উইকেট নেন মালিঙ্গা৷ তিনি হলেন বিশ্বের একমাত্র বোলার, যিনি বিশ্বকাপে দু’বার হ্যাটট্রিক করেছেন৷ ২০০৭ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ২০১১ বিশ্বকাপে কেনিয়ার বিরুদ্ধে৷ টেস্ট ও ওয়ান ডে থেকে সরে দাঁড়ালেও সম্ভবত আগামী বছর টি-২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত দেশের হয়ে সংক্ষিপ্ত ফর্ম্যাটে খেলতে দেখা যাবে ৩৬ ছুঁই ছুঁই এই লঙ্কান পেসারকে৷