উচ্চতা নিয়ে অনেকেরই কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন উচ্চতা বংশগত কারণে কম বেশি হয়ে থাকে। আসলে মানুষের দেহের উচ্চতা কম বেশি হওয়ার পেছনে জেনেটিক্যাল কিছু ব্যাপার বাদেও কাজ করে আরো নানা বিষয়। গবেষণায় দেখা যায়, উচ্চতার উপর প্রায় ২০% প্রভাব থাকে পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস ও দৈনন্দিন কার্যকলাপের। সুতরাং এগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে দেহের উচ্চতা বাড়ানো সম্ভব। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক দেহের উচ্চতা বাড়াতে কি কি কাজ করা উচিত-
পরিমিত পরিমাণে ঘুম ও বিশ্রাম
ঘুমের সময় দেহ গঠনের টিস্যুগুলো কাজ করে। এর ফলে উচ্চতা ও শারীরিক গঠন
বৃদ্ধি পায়। হিউম্যান গ্রোথ হরমোন প্রাকৃতিক উপায়ে দেহে উৎপন্ন হতে থাকে
যখন সঠিক পরিমাণে ঘুমানো এবং বিশ্রাম নেয়া যায়। তাই বয়স অনুযায়ী ৮-১১ ঘণ্টা
ঘুম ও বিশ্রাম দেয়ার চেষ্টা করুন নিজেকে। প্রাকৃতিক উপায়ে এটিই সবচাইতে
ভালো পদ্ধতি উচ্চতা বৃদ্ধি করার।
নিয়মিত ব্যায়াম এবং খেলাধুলা
ছোটবেলা থেকেই যারা অনেক বেশি খেলাধুলা করে থাকে এবং সুঠাম দেহের অধিকারী
হয় তাদের উচ্চতা অন্যান্যদের তুলনায় একটু বেশি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।
এছাড়াও সাতার, আরোবিক্স, টেনিস, ক্রিকেট, ফুটবল, বাস্কেটবলের মতো খেলার
মাধ্যমে ও হাঙ্গিং, স্ট্রেচিং ধরণের ব্যায়াম দেহের উচ্চতা বৃদ্ধিতে বেশ
সহায়ক। কারণ যারা অনেক বেশি খেলাধুলা এবং ব্যায়াম করেন ও যারা সুঠাম দেহের
অধিকারী তারা স্বভাবতই একটু বেশি এবং পুষ্টিকর খাবার খান। এতে করে দুটো
ব্যাপারই কাজ করে উচ্চতা বৃদ্ধিতে।
যোগব্যায়াম
যোগব্যায়ামের অভ্যাস উচ্চতা বৃদ্ধিতে বেশ ভালো ভূমিকা পালন করে থাকে।
যোগব্যায়াম দেহে ঘুমের সময় যে গ্রোথ হরমোনের নিঃসরণ ঘটায় তা উৎপন্ন করে এবং
উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ট্রাইঅ্যাঙ্গেল পোজ, কোবরা পোজ, মাউন্টেইন
পোজ, প্লিজেন্ট পোজ, ট্রি পোজ ইত্যাদি ধরণের উচ্চতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভাবে
সহায়ক।
দেহের সঠিক অঙ্গবিন্যাস
সঠিকভাবে ঘাড় ও মেরুদণ্ড সোজা রেখে হাঁটুন। বসা ও শোয়ার সময় ঘাড় বেশি বাঁকা
করবেন না। এছাড়া মেরুদণ্ড প্রায় সমান্তরালে রাখার মতো অঙ্গবিন্যাসও উচ্চতা
বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।
সুষম খাদ্যাভ্যাস
উচ্চতা বৃদ্ধিতে সব চাইতে সহায়ক হচ্ছে সুষম খাবার খাওয়ার অভ্যাস। পুষ্টিকর
এবং স্বাস্থ্যকর খাবার দেহের হাড় ও কোষের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ভিটামিন ডি
দেহে গ্রোথ হরমোন উৎপন্ন করে। ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠন এবং হাড় মজবুত করে।
ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং কার্বোহাইড্রেট কোষ গঠন ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
এছাড়াও খাবার হজম এবং পুরো দেহে পুষ্টি পৌঁছানোর ব্যাপারটিও উচ্চতা
বৃদ্ধিতে সহায়ক। তাই সুষম খাবার নিয়মিত খাবার চেষ্টা করুন।
উচ্চতায় বাঁধা প্রদান করা কাজ থেকে বিরত থাকুন
জাংক ফুড, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, কার্বোনেটেড ড্রিংকস, অতিরিক্ত চিনি ইত্যাদি
ধরণের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ধূমপান,মদ্যপান, রাতে না ঘুমানো
ইত্যাদি দেহে গ্রোথ হরমোন তৈরিতে বাঁধা প্রদান করে থাকে। বিশেষ করে ধূমপান
এবং মদ্যপানের অভ্যাস যদি বাবা-মায়ের থেকে থাকে তবে তার প্রভাব সন্তানের
উপরেও পড়ে। তাই এইসব কাজ থেকে বিরত থাকুন।