মর্গ নিয়ে অদ্ভুত ঘটনার যেন শেষ নেই। বহু ঘটনাই ঘটেছে এ নিয়ে। কয়েকদিন আগে শোনা গিয়েছিল, ভারতের এক মর্গের লাশ চেপে ধরেছে ডোমের হাত! ঘটনাটি ছিল, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরই ওই যুবকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। নিহতের লাশটি সারারাত ধরে সেখানেই পড়েছিল।
কিন্তু সকালে যখন ডোমরা ময়নাতদন্তের কাজ শুরু করলেন ঠিক তখনই ঘটল বিপত্তি। মৃত যুবকের লাশটি হঠাৎ করেই শোয়া থেকে উঠে বসলো। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, এরপর মর্গের এক ডোমের হাত চেপে ধরল লাশটি। মূলত মর্গে এই ধরণের ঘটনা ঘটাই স্বাভাবিক। কারণ নিত্যদিন সেখানে হাজার হাজার লাশের সমাগম ঘটে। তাদের আত্নাগুলো নাকি ভীতদের সঙ্গে খেলা করে (রটিত কথা)!
এর আরো কয়েকবছর আগে শোনা গিয়েছিল আরেকটি ভয়ঙ্কর ঘটনা। এক কর্মী একটি মৃতদেহ নিয়ে মর্গে ঢুকেছেন। দেখলেন পাশে রাখা একটি মৃতদেহ নড়াচড়া শুরু করেছে। বাক্সের ঢাকনা খুলে বিষয়টি দেখতে যেতেই শুনলেন- ‘ঠান্ডায় জমে যাচ্ছি। এক কাপ গরম চা দাও, খাবো’। এটা শুনেই কর্মীর বেহাল অবস্থা, তিনি ছুটতে শুরু করলেন। আর বাইরে গিয়ে আশপাশের সবাইকে ডাকলেন। পরে জানা যায়, মৃত ভেবে যাকে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছিল তিনি বেঁচে উঠেছেন।
মর্গে এই ধরণের ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে শত শত। এদিকে এবার ঘটলো আরো ভয়ঙ্কর ঘটনা। যা শুনলে হয়ত আপনার শরির শিহরিয়ে উঠবে রীতিমত। হাসপাতালের ডাক্তাররা তাকে (নিথর দেহ) মৃত ঘোষণার পরই মৃতদেহটির ঠাঁই হয় মর্গে। সেই মর্গের হিমাগার থেকে লাশ উঠে যোগ দিল পার্টিতে। ঘটনাটি ঘটেছে রাশিয়ায়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্যা মিরর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করতে গিয়ে মাত্রাতিরিক্ত ভদকা পান করেন এক ব্যক্তি (মৃত ঘোষণা করা ওই ব্যক্তি)। পার্টি চলাকালীনই তিনি গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তড়িঘড়ি করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পাশের এক হাসপাতালে। ডাক্তাররা পরীক্ষা করে জানান, খানিকটা আগে মারা গেছেন ওই ব্যক্তি। পরে তার লাশ রাখা হয় হিমাগরে।
পুলিশের মুখপাত্র আলেক্সে স্টোয়েভ জানান, স্থানীয় মর্গ সেদিন প্রায় লাশে ভর্তি ছিল। এমনকি মর্গের মেঝে ও ফ্রিজাররুমেও ভর্তি ছিল কোনো জায়গা ছিল না। শুধু লাশ আর লাশ। আর সেখানেই ঘটে এই অলৌকিক ঘটনা। অন্ধকার লাশঘরের ভেতরেই জীবন ফিরে পান ওই ব্যক্তি। কীভাবে এই ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে এখনো দ্বিধা-দ্বন্দ্বে চিকিৎসকরা। তাদের অনুমান, মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহলের প্রভাবে ব্যক্তির মস্তিষ্কের ক্রিয়া এমনভাবে ব্যাহত হয়েছিল, যাতে তাকে মৃত বলে মনে করা হয়েছিল। সম্ভবত, মর্গের ফ্রিজার রুমের ঠাণ্ডাতেই সে সমস্যা মিটে গেছে। মস্তিষ্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করতেই পুনঃপ্রাণ ফিরে পান তিনি। তখনও তিনি মাতাল ছিলেন, তার নাকে ভদকার গন্ধ লেগেই ছিল!
কিন্তু লাশ থেকে তরতাজা মানুষ হয়ে ওঠার অভিজ্ঞতা কী রকম? জানতে চাইলে জবাবে ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, অন্ধকারে মধ্যে আছন্ন অবস্থা থেকে উঠে প্রথমে তিনি বুঝেই উঠতে পারছিলেন না তিনি ঠিক কোথায় আছেন? পরে ঘোর কাটতে হাতে ঠেকে মানুষের ঠাণ্ডা শরীর। তখনই প্রচণ্ড ভয় পেয়ে যান তিনি (ওই মৃত ব্যক্তি)। চিৎকার করে মর্গ থেকে বেরিয়ে আসেন। ওই ব্যক্তির বেরিয়ে আসার পর রক্ষীরাও বেশ হতভম্ব হয়ে পড়েন, চিৎকার করতে করতে লাশঘর থেকে জীবন্ত হয়ে ছুটছে এক লাশ। পরে পুরো ঘটনা জানানো হয় পুলিশকে।
এদিকে, ওই ব্যক্তি মর্গ থেকে জীবন ফিরে পাওয়ার পর ফিরে যান বন্ধুদের কাছে। সেখানে তাকে দেখে বন্ধুরা নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। তবে বাস্তব যে কল্পনার থেকেও সত্যি, সে কথাই একটা সময় মেনে নেন তারা। আর তাই ফের শুরু হয় ভদকা পার্টি। আর এটাই ছিল বন্ধুর পুনর্জন্ম সেলিব্রেট পার্টি। পরদিন রাতভর চলল সেই পার্টি।