যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বা নাসার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ শাখা জেট প্রপালশন ল্যাব হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে। জেপিএল রকেট ও জেট ইঞ্জিন নিয়ে গবেষণা করে থাকে। এবং সম্ভাব্য শত্রু দেশের হাত থেকে গবেষণা তথ্যের সুরক্ষায় বিশ্বের সবচাইতে উন্নত হ্যাকার প্রতিরোধী ফায়ারওয়াল ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটি।
কিন্তু, এত সাবধানতার পড়েও জেপিএল হ্যাকিংয়ের কবলে পড়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্সপেক্টর জেনারেলের দপ্তর প্রকাশিত সাম্প্রতিক নথিতে বিষয়টি প্রকাশ করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিরক্ষা এবং মহাকাশযানের ইঞ্জিন গবেষণায় নেতৃত্ব দেয়ায় হ্যাকাররা সব সময় জেপিএল- এর সার্ভার হ্যাক করে তথ্য চুরি করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। সম্প্রতি একটি অনুমোদনহীন র্যাসপবেরি-পি কম্পিউটার জেপিএল সার্ভারে লগইন করে। এই সুযোগে হ্যাকাররা ওই কম্পিউটার ব্যবহার করে জেপিএল সার্ভারে প্রবেশের সুযোগ পায়।
এরপর হ্যাকাররা নাসার স্পর্শকাতর ও অতি গোপনীয় মহাকাশ গবেষণা নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে। ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবস্থাতেও এই সময় হ্যাকাররা অনুপ্রবেশ করে। ধারণা করা হচ্ছে, হ্যাকাররা শত শত কোটি ডলার মূল্যের গবেষণা তথ্য চুরি করেছে।
২০১৮ সালের এপ্রিলের এই হ্যাকিংয়ের ঘটনা এতদিন গোপন রাখা হয়েছিলো। যা চলতি সপ্তাহে প্রকাশ করেছে মার্কিন মহাপরিদর্শকের দপ্তর। পরিদর্শক কতৃপক্ষের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, হ্যাকারদের ওই অনুপ্রবেশ এতই সফল ছিলো যে তারা জনসন স্পেস সেন্টারের নেটওয়ার্কেও প্রবেশ করতে সমর্থ হয়।
জনসন সেন্টার থেকেই মহাকাশে স্থাপিত ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্র। জনসন নাসার সবচাইতে কর্মব্যস্ত মহাকাশযান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র। তবে কেন্দ্রটির কর্মকর্তারাই সবার আগে হ্যাকিংয়ের বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হন, এবং তারা নিরাপত্তার স্বার্থে নাসার নেটওয়ার্ক থেকে নিজেদের সার্ভার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
হ্যাকাররা জনসন কেন্দ্র পরিচালিত মহাকাশ মিশনের তথ্য চুরি করবে বা সেখানে সাইবার নাশকতা সৃষ্টি করবে, এই আশংকা থেকেই সেখানকার কর্মকর্তারা এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন।