‘বউ কিনতে চান?’ এমন শিরোনাম দেখে চমকে ওঠার কিছু নেই। নাইজেরিয়ার ক্রস রিভার রাজ্যে এমন এক সম্প্রদায় আছে যেখানে দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারের অল্প বয়সী মেয়েদের বিয়ের নামে টাকা দিয়ে কিনতে পারেন ধনীরা।
দেশটির সর্ব দক্ষিণের ওই রাজ্যের বেশেরে সম্প্রদায়ে অর্থের বিনিময়ে অল্প বয়সী মেয়েদের বিয়ের নামে বিক্রি করে দেয়া নিত্যদিনের একটি প্রথা। সেখানকার আরো কয়েকটি সম্প্রদায়ের মধ্যে এখনো এ ধরণের ভয়াবহ বিতর্কিত প্রথার প্রচল রয়েছে। এক্ষেত্রে বিক্রি হওয়া মেয়েটির না থাকে কোনো স্বাধীনতা। এছাড়া শিক্ষা বা চিকিৎসার সুযোগ থেকেও তারা বঞ্চিত হন।
তবে স্থানীয় ধর্মীয় নেতারা এই প্রথার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ২০০৯ সাল থেকেই নাইজেরিয়াতে মানি ম্যারেজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু এত কিছুর পরও দায়ীদের কাউকে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি।
ক্রস রিভার রাজ্যের এক তরুণীর নাম ডরফি। তার বয়স এখন বিশ ছুঁই ছুঁই। তবে তাকে যখন বিয়ে দেয়া হয়েছিল বয়স ছিল মাত্র ১০ বা ১১ বছর। ওই বয়সে তাকে এমন এক ব্যক্তির হাতে তুলে দেয়া হয়েছিল যার বয়স কিনা তার নানা দাদার চাইতেও বেশি।
জানা যায়, ডরফির আপন মা ও চাচা টাকার জন্য তাকে ওই বৃদ্ধের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল। তাকে বাধ্য করা হয়েছিল মানি ম্যারেজ করতে।
এ প্রসঙ্গে ডরফি বলেন, লোকটি আমার সঙ্গে শুতে চাইলে আমি বলতাম, না। তিনি বলেন, আমি এমনটা হতে দেব না কারণ আপনি আমার বয়সের না। আপনার ছেলেমেয়েরাও আমার অনেক বড়। যখন আমি মানা করতাম, তখন সে আরো দুইজন লোক ডেকে আমার ওপর জবরদস্তি করতো।
এভাবেই অমানুষিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়েন ডরফি। অথচ সন্তান ধারণের মতো বয়সও তখন তার হয়নি।
বেশেরে সম্প্রদায়ের মূলত দুই ধরণের বিয়ের প্রচলন রয়েছে। একটি হল লাভ ম্যারেজ বা ভালবাসার বিয়ে। অপরটি হল মানি ম্যারেজ।
এক্ষেত্রে লাভ ম্যারেজে স্ত্রীর জন্য কোন পণ দেয়ার পড়ে না। নববধূ স্বাধীনভাবে বাবার বাড়ি আসতে-যেতে পারে। তার ঘরে যে সন্তান জন্ম নেবে সেটা মায়ের পরিবারের উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে বেশেরের বেশিরভাগ গ্রাম প্রধানকেই মানি ওয়াইফ রাখতে দেখা যায়।
অন্যদিকে মানি ম্যারেজে কম বয়সী মেয়েদের বিক্রি করে দেয়ায় তারা তাদের স্বামীর পরিবারের সম্পত্তিতে পরিণত হয়।