কোথাও পেশার তাগিদ আবার কোথাও বা নিজের স্বভাবদোষেই শিরদাঁড়ার হাড় ক্ষয়ের জানান দেয় অকালেই। সহজ করে বললে, স্পন্ডিলোসিস বাসা বাঁধছে শরীরে। অফিস ডেস্কে কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই টনটন করে উঠছে পিঠ, কাঁধ। কিংবা বাড়িতেও একটানা টিভি দেখতে গিয়ে বা ঘুম থেকে উঠে ঘাড় ঘোরাতে গেলেই মালুম হচ্ছে কলকব্জা বশে নেই।
এ সমস্যা আপনার একার নয়। দৈনন্দিন দৌড়ঝাঁপের সময়ও মাঝে মাঝেই টের পান যে ব্যথা, তা আধুনিক জীবনযাত্রার অসুখ বা লাইফস্টাইল ডিজিজ বলেই দেগে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। অস্থিবিশেষজ্ঞ চিন্ময় নাথের মতে, ‘‘স্পন্ডিলোসিস আসলে শিরদাঁড়ার হাড়ের সমস্যা। জন্মের পর থেকে আমাদের হাড়ের সংযোগস্থল বা অস্থিসন্ধিগুলো যেমন থাকে, তা নিয়েই আমরা বেড়ে উঠি, এ বার সে সব ব্যবহার করতে করতে যন্ত্রের মতোই ক্ষয়ে যেতে শুরু করে। কখনও আবার অস্থিসন্ধির অঞ্চলে থাকা তরল জেল বাইরে বেরিয়েও আসে। তখনই জানান দেয় ব্যথা। ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে সারা ক্ষণের ব্যথা, ঘাড় নাড়াতে অসুবিধা হওয়া এই রোগের মূল কষ্টের দিক। ঘাড়ের দিকের অংশে এই রোগ হলে তাকে আমরা বলি, সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলোসিস। আবার শিরদাঁড়ার নীচের দিকের অংশে অর্থাৎ পিঠের নীচের দিকে হলে তাকে আমরা বলি লাম্বার স্পন্ডিলোসিস।’’
এ রোগের কোনও বয়সসীমা যেমন নেই, তেমন নেই কোনও লিঙ্গ প্রাধান্যও। এই অসুখ পুরুষ-মহিলা সকলের হতে পারে। সাধারণত, ঘাড় ঝুঁকিয়ে কাজ করতে করতে হয়, বা ঘাড়ে ঝাঁকুনি লাগে এমন কাজ করতে হয় যাঁদের, এই রোগে তাঁরাই বেশি আক্রান্ত হন। তবে সময় মতো চিকিৎসা করালে এই অসুখ নিয়ন্ত্রণে থাকে। মেনে চলতে হয় কিছু ব্যায়াম ও নিয়ম। চিন্ময়বাবুর মতে, ব্যথা কাঁধ থেকে উপরের পিঠে উঠে হাত অবধি ছড়িয়ে যায়। স্পাইনাল কর্ডের উপরেও চাপ ফেলে এই অসুখ।