ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হলে নিয়ম মানার সতর্কতা তো রয়েইছে, তার সঙ্গে রয়েছে ইনসুলিনের খামখেয়ালিপনা নিয়েও চিন্তা। টাইপ ১ ডায়াবিটিসে ভুগলে ভয়–ভীতি করে কোনও লাভ নেই, কারণ তাঁদের শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয় না বলে গোড়া থেকেই ইনজেকশন নিতে হয়৷ তবে এ তো মাত্র ৫–১০ শতাংশ রোগীর গল্প৷ ডায়াবেটিক রোগীদের মধ্যে ৯০–৯৫ শতাংশেরও বেশি ভোগেন টাইপ ২ বা অ্যাডাল্ট অনসেট ডায়াবিটিসে৷
মধ্য বয়সের আগে–পরে রোগ হলে রোগের পর্যায়ের উপর নির্ভর করে প্রথম দু’–এক বছর ডায়েট–লাইফস্টাইল মেনে তাকে ভাল ভাবে বশে রাখা যায়৷ তার পর ওষুধ খেতে হয়৷ তার ৫–১০ বা ১৫ বছর পরে আসরে নামে ইনসুলিন৷ এখানে কারও কিছু করার নেই৷ চিন্তারও কিছু নেই৷ কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা বোঝেন না৷ তাঁরা ভাবেন ইনসুলিন শুরু হয়েছে মানেই ডায়াবিটিস খারাপ পর্যায়ে চলে গিয়েছে৷ কেউ ভাবেন এতে আসক্তি হয়৷ কারও ভয় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার। কেউ আবার ইনসুলিন নিচ্ছেন বলে নিয়ম–কানুন ভুলে সব কিছু খেতে শুরু করেন৷ কারণ তাঁদের ধারণা ইনসুলিন শুরু হয়ে গেলে আর খাবারের নিয়ম মানার দরকার নেই৷ এ সবই ভ্রান্ত ধারণা৷
ডায়েট, ব্যায়াম ও ওষুধের নিয়ম মানার পরও যখন আর প্যানক্রিয়াস থেকে পর্যাপ্ত ইনসুলিন বেরয় না, তখন বাইরে থেকে ইনসুলিন দিয়ে রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে হয়৷
ভুল করছিলেন ? শুধরে নিন
- ইনসুলিনে শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না৷ প্রয়োজন সত্ত্বেও না নিলে বরং আয়ু কমে, প্রেশার–কোলেস্টেরল বাড়তে পারে, হার্ট, কিডনি থেকে শরীরের সব প্রত্যঙ্গই খারাপ হতে শুরু করে৷ অতএব, ডাক্তার বললে, নির্দ্বিধায় শুরু করুন৷
- ইনসুলিন নিলেও খাবারে নিয়ন্ত্রণ রাখা দরকার৷ কারণ ইনসুলিনে সুগার কমে, ওজন তো আর কমে না ডায়াবেটিস থাকলে এমনিতেই হাই প্রেশার–কোলেস্টেরল ও হূদরোগের চান্স থাকে৷ ওজন বাড়লে সে চান্স আরও বেড়ে যায়৷ বেশি প্রোটিন খেলে কিডনি খারাপ হয় দ্রুত৷ অতএব ইনসুলিন নিন বা ওষুধ খান, খেতে হবে লো–ক্যালোরির সুষম ও ফাইবারযুক্ত খাবার৷
- ইনসুলিন নিলে দু’–এক কেজি ওজন বাড়ে৷ শুয়েবসে থাকলে তা আরও বেড়ে যায়৷ তার হাত ধরে বাড়ে রোগের জটিলতা৷ কাজেই নিয়মিত ব্যায়াম করে শরীর একেবারে ছিপছিপে রাখা দরকার৷
- অনেক সময় পর্যাপ্ত ইনসুলিন নেওয়া সত্ত্বেও সুগার ঠিক ভাবে কমে না, অর্থাৎ ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হয়৷ তখন ভাল করে ব্যায়াম করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ম্যাজিকের মতো কাজ হয়৷