সাধারণত যে যে প্রাকৃতিক উপাদানগুলি দিন-রাত ২৪ ঘন্টা শরীরকে পাহারা দিয়ে থাকে, তাদের মধ্যে অন্যতম হল আমলকি এবং মধু। সূতরাং আজ থেকেই এই দুটি প্রকৃতিক উপাদানকে একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন।
ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন
দেখবেন ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না। আসলে আমলকিতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং উপকারি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যেখানে মধু নানাবিধ ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ। সেই কারণেই তো প্রতিদিন আমলা রস এবং মধু একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে নানা উপকার মেলে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কী সেগুলো।
১. জ্বরের প্রকোপ কমায়
চিকিৎসকেদের
মতে এমন পরিস্থিতিতে নিয়মিত মধু এবং আমলকির রস খেলে জ্বরের দাপট কমে যায়।
সেই সঙ্গে হাঁচি-কাশি এবং জ্বর ঠোসার প্রকোপও হ্রাস পেতে শুরু করে।
প্রসঙ্গত, জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আগে অনেকেরই গলা ব্যথা হয়ে থাকে। এমন ধরনের
সমস্যা কমাতেও আমলকির রস এবং মধু দারুন কাজে আসে।
২. কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়
শরীরে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বাড়ার কারণে চিন্তায় আছেন? তাহলে আজ থেকেই আমলকি এবং মধু খাওয়া শুরু করুন।
দেখবেন
উপকার মিলবে। কারণ মধু এবং আমলকির রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং উপকারি
অ্যামাইনো এসিড রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি
হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. ডায়াবেটিস রোগকে লাগাম পরায়
বেশ
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত আমলকির রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে
ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তে সুগারের
মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। তাই যারা ইতিমধ্যেই
ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তারা সুস্থ থাকতে এই ঘরোয়া পদ্ধতিটির
সাহায্য নিতেই পারেন। তবে একবার আমলকির রস খাওয়া শুরু করার আগে চিকিৎসকের
সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে ভুলবেন না যেন!
৪. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়
আমলকি
প্রকৃতিতে অ্যালকেলাইন। যে কারণে আমলকির রস খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে থাকা
বর্জ্য পদার্থ বেরিয়ে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ডায়জেস্টিভ সিস্টেম এতটাই
কর্মক্ষম হয়ে ওঠে যে হজম শক্তি বাড়তে সময়ই লাগে না।
৫. লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ায়
শরীরের
ভেতরে যে কয়টি ভাইটাল অর্গ্যান রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল লিভার। সেই
কারণেই তো এই অঙ্গটিকে সবদিক থেকে বাঁচিয়ে রাখা একান্ত প্রয়োজন। আর এই
কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে আমলকি এবং মধু। কীভাবে? একাধিক গবেষণায় দেখা
গেছে আমলকি রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা
বাড়তে শুরু করে। এই উপাদানটি লিভারের ক্ষতি করতে পারে এমন বিষাক্ত
উপাদানদের শরীরে থেকে বের করে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই লিভারের কর্মক্ষমতা
বৃদ্ধি পায়। তাই যারা নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন করেন, তারা লিভারকে নানাবিধ
ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে আমলকির রস খেতে ভুলবেন না যেন!
৬. পুষ্টিকর উপাদানের ঘাটতি দূর করে
শরীরকে
সচল রাখতে দৈনিক যে যে ভিটামিন এবং মিনারেলের প্রয়োজন পড়ে, তার বেশিরভাগই
সরবরাহ করে আমলকি। সেই সঙ্গে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি এবং ফসফরাসের মতো
উপাদানের ঘাটতিও দূর করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
৭. চুলের সৌন্দর্য বাড়ায়
চুলের গঠনে
প্রোটিনের অবদানকে অস্বীকার করা সম্ভব নয়। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা
আছে যে আমলকিতে যেমন প্রোটিন রয়েছে, তেমনি রয়েছে প্রচুর মাত্রায়
অ্যামাইনো অ্যাসিড। সেই কারণেই তো নিয়মিত আমলকি খাওয়ার অভ্যাস করলে চুলের
ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে হ্রাস পায়।
৮. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়
আমলকির রস
এবং মধু মিশিয়ে বানানো মিশ্রনে তুলা চুবিয়ে তা দিয়ে যদি ভাল করে মুখ
পরিষ্কার করা যায়, তাহলে কালো ছোপ ছোপ দাগ, ব্রণের দাগ এবং বলিরেখা কমে।
সেই সঙ্গে ত্বকের ঔজ্জ্বল্যও ব্যাপকভাবে বাড়ে।