বিকাশ, রকেটের মতো মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট, ব্যাংক কর্মকর্তা কিংবা লটারি জেতার নাম করে প্রতিনিয়ত মানুষকে ধোকা দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করছে এক শ্রেণির প্রতারক। এদের বিরুদ্ধে ডিএমপির সিটিটিসি’র সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশন ও পুলিশরে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) কাজ করে যাচ্ছে। তারপরও প্রায়ই প্রতারিত হচ্ছে মানুষ। করোনাকালীন সময়ে এ ধরনের অপরাধের মাত্রা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিটিটিসি সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ফরিদপুরের ভাঙ্গা, মধুখালি ও মাগুরার শ্রিপুর থেকে ৪০ জন বিকাশ প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়। ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের কর্মকর্তা সেজে প্রতারণার অভিযোগে গত মাসে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে গ্রেফতার করা হয় ৪ জনকে। আবার লটারি জেতার নামে প্রতারণার অভিযোগে ২০ থেকে ২৫ জন নাইজেরিয়া, ঘানা, কেনিয়ার নাগরিকসহ এ দেশীয় দোসরদের গ্রেফতার করে সিটিটিসি।
এ ধরনের সাইবার প্রতারণা থেকে বাঁচতে সিটিটিসি’র সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশন তাদের ফেসবুক পেজে কিছু সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে।
তাদের মতে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের পরিচয়ে কেউ ফোন দিলে তা এড়িযে যেতে হবে। কোনোভাবেই গোপন পিন নম্বর দেয়া যাবে না। এ ধরনের প্রতারকরা কোনো বিকাশ এজেন্টের দোকানে সামনে ওৎ পেতে থাতে। সেখান থেকে তারা জেনে নেয় কে কত টাকা কোন নম্বরে পাঠাচ্ছে। সেই সূত্র ধরে তার ফোন দেয় বিকাশ কর্মকর্তা সেজে। এ ধরনের কিছু সঠিক তথ্য উপস্থাপন করে কথা বলায় অনেকে প্রতাররকদের কথা বিশ্বাস করেন। সিটিটিসি’র মতে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান থেকে কখনো গ্রাহকদেরকে ফোন করা হয় না। তাই এসব বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
একই ধরনের প্রতারণা হচ্ছে ব্যাংকের কাস্টমার সেন্টার এর এজেন্ট বা কার্ড ডিভিশনের অফিসার এর নামে। এই প্রতারকরাও মানুষকে বিভ্রান্ত করতে কিছু তথ্য দিয়ে ও তথ্য নিতে ফোন দেয়। তবে এদের কথায় বিভ্রান্ত হয়ে কার্ড এর গোপনীয় তথ্য বিশেষ করে সিভিভি নাম্বার না দিতে পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। কারণ এসব তথ্য জানতে পারলেই প্রতারকরা গ্রাহকের টাকা সরিয়ে ফেলতে পারে। মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের মতো ব্যাংক কর্তৃপক্ষও কোনোভাবেই আপনার গ্রাহকের কাছে ফোন দিয়ে সিভিভি নাম্বার জানতে চায় না।
সাইবার প্রতারণার আরেকটি ফাঁদ হচ্ছে নাইজেরিয়ান স্ক্যাম। গিফট বা পারসেল পাঠিয়ে কিংবা লটারিতে মোটা অংকরে অর্থ জিতেছেন বলে প্রতারণা করে চক্রটা। এর আগে তারা ফোনের মেসেজে, ইমেইল বা ফেসবুক মেসেঞ্জারে সম্পর্ক তৈরি করে টার্গেটকৃত ব্যক্তির সঙ্গে। বাংলাদেশে বসবাসরত আফ্রিকার কয়েকজন লোক এই স্ক্যামের সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে সিটিটিসি। এদের সঙ্গে বাংলাদেশরেও কিছু লোকজন জড়িত আছে।