মানসিক রোগ সম্পর্কে সবচেয়ে শকিং বিষয়টি হলো যিনি মানসিক রোগে আক্রান্ত তিনি নিজেও জানতে পারেন না যে তিনি মানসিক রোগে ভুগছেন। মানসিক রোগে আক্রান্তরা নিজেকে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে নিঃসঙ্গ জীবন-যাপন করেন। এ থেকে এমনকি তারা আত্মহত্যাপ্রবণও হয়ে ওঠেন।
যদিও বিজ্ঞানীরা মানসিক রোগের প্রকৃত কারণ কী তা এখনও খুঁজে পাননি তথাপি কিছু গবেষণা বলছে, শারীরিক, মানসিক এবং পরিবেশগত কারণেও মানসিক রোগ হতে পারে।
কারণ যাই হোক মস্তিষ্ক স্বাস্থ্যবান থাকলে মানসিক রোগ দূরে থাকে বলেই বিজ্ঞানীদের মত। এ ক্ষেত্রে আপনাকে সহায়তা করতে পারে মস্তিষ্কের জন্য স্বাস্থ্যকর এবং ভারসাম্যপূর্ণ একটি খাদ্যাভ্যাস। আর মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে আপনি মানসিকভাবেও সুস্থ থাকবেন। কোনো মানসিক রোগই আপনার ধারে কাছে ঘেষতে পারবে না।
আসুন জেনে নেওয়া কোন কোন খাবার খেলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
১. চিয়া সিড বা শ্বেত বীজ: এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড। যা অবসাদ এবং এডিএইচডি এর মতো মানসিক বিশৃঙ্খলা দূরে রাখে। এই উপাদানটি মস্তিষ্ককে ভাইরাস সংক্রমণ থেকেও মুক্ত রাখে এবং কোষগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বাড়ায়। যার পরিণতিতে স্মৃতিশক্তিও বাড়ে।
২. ডিম: এতে আছে ফলিক এসিড, বায়োটিন এবং কোলিন যা মস্তিষ্ককে স্বাস্থ্যবান রাখতে জরুরি। এছাড়া এসব উপাদান মস্তিষ্কের কোষ এবং স্নায়ুর উন্নয়ন ঘটাতেও সহায়ক ভুমিকা পালন করে।
৩. দই: এই খাবারটি আমদের হজম প্রক্রিয়াকে স্বাস্থ্যবান রাখে। যার ফলে আমাদের মস্তিষ্কের নানা কর্মকাণ্ড ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয় বা স্বাভাবিক থাকে। বিশেষ করে আমাদের আবেগগত তৎপরতাকে প্রভাবিত করে দই। ফলে দই খেলে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ দূরে থাকে।
যাদের পাকস্থলিতে সবসময়ই প্রদাহজনিত সমস্যা থাকে তাদের মেজাজ-মর্জিও সবসময় তিতিবিরক্ত হয়ে থাকে। দই খেলে এই সমস্যার সমাধান হয়। দই মানুষের মেজাজ-মর্জিকে সরাসরি প্রভাবিত করে। প্রো-বায়োটিক উপাদান বেশি খেলে স্ট্রেস হরেমোনের নিঃসরণও হয় কম।
৪. ব্রকলি: এতে আছে মস্তিষ্কের জন্য উপকারি বেশ কয়েকটি উপাদান। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা মস্তিষ্কের তৎপরতা বাড়ায় এবং মস্তিষ্কের তারুণ্য ধরে রাখে।
৫. সবুজ শাক-সবজি: বলা হয়ে থাকে প্রতিদিন একবার ভালো পরিমাণে সবজি খেলে স্মৃতিভ্রংশ রোগে দূরে থাকে। যারা প্রতিদিন প্রচুর এই খাবারটি খায় তাদের মানসিক ক্ষয় হয় কম। সবুজ শাক-সবজিতে থাকে ভিটামিন কে যা মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী।
৬. বাদাম: বাদামে আছে উচ্চ মাত্রার ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম এবং কপার। এসব উপাদান মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং মানসিক রোগ দূরে রাখে।
৭. ডার্ক চকোলেট: মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাড়ায় ডার্ক চকোলেট। কারণ এতে আছে কোকোয়া। যা স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সহায়ক। আর এতে থাকা ফ্ল্যাবোনয়েড মস্তিষ্কের তারুণ্য ধরে রাখে এবং মস্তিষ্কের মৌলিক কোনো ক্ষয় থেকে রক্ষা করে।