গ্রীষ্মপ্রধান দেশে ডিম সংরক্ষণ করা বেশ কষ্টকর। কারণ গরমে ডিম তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়। মূলত বাজার থেকে বেশি করে ডিম কিনে এনে সংরক্ষণ করে থাকি। ডিম সংরক্ষণ করতে জেনে নিন কিছু উপায়-
১) কেনার পরই ডিমগুলোকে রেফ্রিজারেটরে রাখুন কিংবা এমন কোন ঠান্ডা জায়গায় রাখা উচিত সেখানকার তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি নয়। আবার এর কম তাপমাত্রা হলেও ডিমের গায়ে ছাতা ধরে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
২) শাকসবজি যেখানে থাকে সেখানে ডিম রাখা চলবে না। তাতে ডিমে গন্ধ হয়ে যেতে পারে।
৩) যাদের ফ্রিজ বা ঠান্ডা ঘরের ব্যবস্থা নেই, যারা গ্রাম অঞ্চলে থাকেন এবং একসঙ্গে অনেক ডিম সংরক্ষণ করতে হয়, তারা সাধারণত একটা হাড়ির মধ্যে শুকনো তুষ বা বিচালি বিছিয়ে তার উপরে ডিম রেখে ওই হাঁড়ির নিচের অর্ধেক অংশ মাটিতে পুঁতে রাখতে পারেন। আর হাঁড়ির মুখ চাপা দিয়ে হাঁড়ির গায়ে কয়টি ফুটো করে দেবেন বাতাস চলাচলের জন্য এভাবে কম করেও ১৫ দিন ডিমগুলো ভালো থাকবে।
৪) ডিমের গায়ে তেল মাখিয়ে রাখলেও ডিম অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকে। চেষ্টা করবেন যে ডিমগুলো সংরক্ষণ করে রাখবেন সেগুলো এক সপ্তাহের মধ্যে খেয়ে নিতে বেশি দিন পর্যন্ত ডিম সংরক্ষণ না করাই ভালো।
৫) দৈবাৎ কিছু ডিমের কুসুম বেঁচে যায় প্রয়োজন মিটিয়ে, তবে ওই কুসুম ঠাণ্ডা পানিতে মিশিয়ে একটি টাইট করে ঢাকনা আট আবার পাত্র ভরে ফ্রিজে রেখে দেবেন তবে তা দুই দিনের মধ্যে খেয়ে নেবার ব্যবস্থা করবেন। তার চেয়ে দেরি করলে নষ্ট হয়ে যাবে।
৬) খোসাশুদ্ধ ডিম যখন সিদ্ধ করবেন তখন আগে পাত্রে ডিম রেখে তারপর পুরোপুরি ডুবে যায় এমনভাবে পানি দিয়ে তা সিদ্ধ করবেন। আগে পানি দিয়ে তারপর চুলায় না দেয়াই ভালো।
৭) হাফ বয়েল করতে হলে প্রথমেই লক্ষ্য করবেন ডিমে কোন চির বা ফাটল আছে কিনা। তারপর পাত্রে ডিম রেখে, তাতে পানি ঢেলে, ঢাকা দিয়ে, ধীরে ধীরে পানি গরম হতে দিন। পানি যেই ফুটবে সঙ্গে সঙ্গে পাত্রটি নামিয়ে ৩ থেকে ৪ মিনিট রেখে দিন। দেখবেন হাফ বয়েল হয়ে গেছে।
৮) বাড়িতে একটাই ডিম আছে অথচ সবার জন্য ডিম আলুর তরকারি হলে ভালো হতো? আলুর তরকারি নামানোর আগে ওই ডিমটি ফেটিয়ে গুলে তরকারিতে দিয়ে দিন। মিনিট দুয়েক ফোটার পর কাঁচা সরষের তেল দিয়ে নামিয়ে নিন। দেখবেন ডিমের একটি ভালো তরকারি হয়ে গেছে।
৯) ফ্রিজ খারাপ? চুনের পানিতে ডিমগুলো চুবিয়ে রাখুন ডিম ভালো থাকবে।
১০) সেদ্ধ ডিম কাটার আগে ছুরিটাকে কিছুক্ষণ বরফের মধ্যে রেখে খুব ঠান্ডা করে নিলে ডিমের কুসুম ভেঙে যাবার ভয় থাকে না।
১১) ফ্রিজ ছাড়া ডিম রাখতে হলে বেশি করে পাতি লেবুর রস মেশানো পানিতে ডুবিয়ে রাখুন অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকবে।
১২) অমলেট বা কেকের জন্য ডিম ফোটাবার সময় দু’চার ফোটা লেবুর রস দেবেন। স্বাদ অন্য রকম হবে। এবং অমলেট ও কেকে ডিমের গন্ধ বের হবে না।
১৩) আবার যে পাত্রে ডিম ফোটানো হয়েছে, ওই পাত্রে চা করার পর তার পাতি টা সামান্য পানি দিয়ে যদি রাখা হয় তবে মাজার সময় আঁশটে গন্ধ হয় না।
ভালো ডিম চেনার উপায়: বাজার থেকে বিভিন্ন ধরনের ডিম কিনলেও দেখেই বুঝতে পারি না কোনটা আসল কোনটা নকল। ভালো ডিম চেনার কিছু উপায় রয়েছে-
ক) পানিতে ফেললে ভালো ডিমটি সঙ্গে সঙ্গে ডুবে যাবে বাসি পচা বা খারাপ হলে ভেসে থাকবে।
খ) ডিম ভালো থাকলে খোলা ভাঙার পর দেখা যাবে কুসুমকে জড়িয়ে রয়েছে তার শ্বেত রসালো তরল অংশ।
গ) আলোর সামনে ধরে পরীক্ষা করলে দেখা যাবে যে, স্বাভাবিক টাটকা ডিমের ভিতর সব টা লালচে-হলদে। আরো দেখা যাবে ডিমের মোটা অংশ গভীর ও মাঝখানে কুসুম।