মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন দিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আরও অনেকের জড়িত থাকার কথা শুনা যাচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিন।
রবিবার মামলার অন্যতম দুই সন্দেহভাজন আসামি নুরুদ্দিন এবং শাহাদত হোসেন শামীম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। এতে তার নাম উঠে আসে।
সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া শাহাদাত জবানবন্দীতে জানান, নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর তিনি দৌঁড়ে নিচে নেমে উত্তর দিকের প্রাচীর টপকে বের হয়ে যান। এর মিনিট খানেকের মধ্যে নিরাপদ স্থানে গিয়ে রুহুল আমিনকে ফোনে আগুন দেওয়ার বিষয়টি জানান। তখন রুহুল আমিন বলেন, ’আমি জানি। তোমরা চলে যাও।’
শাহাদাত বলেছেন, নুসরাতকে যৌন হয়রানির ঘটনায় করা মামলার পর রুহুল আমিন থানা ম্যানেজ করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এজন্য অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার পরিবারের কাছ থেকে টাকাও নিয়েছিলেন।
একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মাদ্রাসা কমিটির সহ-সভাপতি ও আওয়ামী লীগের উপজেলা সভাপতি রুহুল আমিন ওরফে গুজা রুহুলের কাছে আমেরিকার ভিসা যুক্ত পাসপোর্ট রয়েছে। তিনি যাতে আমেরিকা পালিয়ে যেতে না পারেন, তাই তাকে পিবিআইয়ের গোয়েন্দারা কড়া নজরদারীতে রেখেছে।
রুহুল আমিনের উত্থান:
সোনাগাজী আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানান, আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে কিছু হাইব্রিড নেতাকে আওয়ামী লীগের নব্য নেতা বানিয়ে দেওয়ার কারণে আজ সোনাগাজী আওয়ামী লীগ কঠিন পরীক্ষায় পড়েছে। দলের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, রুহুল আমিনের চৌদ্দগোষ্ঠী করে বিএনপি। তাকে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের উপজেলা সভাপতি করে দেওয়া হলো। রুহুল আমিন সম্পর্কে বলতে গিয়ে নেতারা আরও বলেন, তার বাড়ি হলো মধ্যম চর চান্দিয়া কুচ্চাখোলা গ্রামে। তার বাবা কোরবান আলী।
পাকিস্তান আমলে কোরবান আলী জাহাজে চাকরি নেয়। চাকরির সুবাদে তিনি সিডিসি (নলি) নিয়ে দেশ-বিদেশ ঘুরার সুযোগ পান। আমেরিকা পোর্টে জাহাজ ভিড়লে গভীর রাতে কোরবান আলী জাহাজ থেকে পানিতে লাফ দিয়ে পড়ে পালিয়ে ডাঙ্গায় উঠে। এরপর তার ভাগ্যের চাকা খুলতে থাকে। দীর্ঘদিন আমেরিকায় কাজ করে দেশ থেকে তার পরিবার পরিজনের সবাইকে সেখানে নিয়ে যায়।
সূত্র: ইত্তেফাক।