পুরুষদের আধিপত্যের এই একটি পেশাতে যাওয়ার জন্য তারা প্রথমে অবশ্য ছেলেদের ছদ্মবেশেই কাজ করতেন, শুধু ছেলে সেজে নয়, নামও বদলে দিয়েছিলেন ছেলেদের নামে। তারপর, সেলুন চালিয়ে বাবার চিকিৎসা আর নিজেদের পড়াশোনা দুই চালিয়েছে নেহা ও জ্যোতি।
এটা মেয়েদের কাজ, এটা মেয়েদের কাজ নয়- কাজ বেচারা নিজেও জানে না তাকে সম্পাদন করতেও সমাজ লিঙ্গ ছাড়া ভাবতেই পারেনি কিছু। অদ্ভুতভাবেই এই জগতে এমন কিছু পেশা রয়েছে, যেখানে মেয়েদের অংশ নিতে দেখা যায় না, গেলেও তা একেবারেই কম। মাংস কাটা থেকে শুরু করে সেলুনে দাড়ি কাটা- এই কাজে কেমন করেই যেন কেবল পুরুষদের দখল। তবে, বদলের সুর তো তৈরি হচ্ছেই বিশ্বে, সুর ভাসতে ভাসতে এসেছে উত্তরপ্রদেশের বানওয়ারি তোলা গ্রামেও।
সেই গ্রামের দুই মেয়ের লড়াইয়ের গল্পের অনুপ্রেরণার একটি বিজ্ঞাপন তৈরি করেছে জিলেট। নেহা এবং জ্যোতির গল্পে অনুপ্রাণিত হয়ে, স্বয়ং সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার শচিনও ছুটে আসেন তাঁদের হাতে দাড়ি কামাবেন বলে। মাস্টার ব্লাস্টার শচীন টেন্ডুলকার সম্প্রতি একটি ইন্সটগ্রাম পোস্ট শেয়ার করে জানিয়েছেন, একটি সেলুনে তিনি দাড়ি কেটেছেন এবং সেই দাড়ি কেটেছেন ২ জন নারী। নেহা এবং জ্যোতির সঙ্গে ছবি পোস্ট করার সময় তিনি আরো জানিয়েছেন, এর আগে এমন অভিজ্ঞতা তার কখনো হয়নি!
শচিন লিখেছেন, ‘আপনি হয়ত এটা জানেন না, কিন্তু কখনো এর আগে এমনভাবে দাড়ি কাটার অভিজ্ঞতা হয়নি আমার। সেই রেকর্ড আজ ভেঙে গিয়েছে। বার্বারশপগার্লসদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে সত্যি সম্মানিত আমি।’
নেহা এবং জ্যোতির শিক্ষাগত ও পেশাগত চাহিদা পূরণের জন্য জিলেটের বৃত্তিও শচিন তাঁদের হাতে তুলে দেন। জিলেট ভারতের বিজ্ঞাপনে লিঙ্গভিত্তিক স্টিরিওটাইপ বিচ্ছিন্ন গল্পটি তুলে ধরার পর থেকেই নেহা এবং জ্যোতি বিশ্বজুড়ে নেটিজেনদের কাছ থেকে অনেক প্রশংসা ও ভালোবাসা পেয়েছেন। কেবল ইউটিউবে ১৬ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বিজ্ঞাপনটি দেখেছেন।
যে ব্লেডটি শেভ করে, সে তো জানে না যে তাকে মেয়ে ব্যবহার করছে নাকি ছেলে। আমি মনে করি, এটিই ভিডিওর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লাইন, কারণ যদি স্বপ্নেরা যদি বৈষম্য তৈরি না করে তবে আমরা কেন? প্রশ্ন শচিন টেন্ডুলকারের। তিনি বলেন, ‘আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে, আজকের বাচ্চারা দেখছে এবং তারা যা দেখে সেটাই শেখে। আমি আশা করি অনেক বাচ্চারাই আজ দেখতে পাবে কীভাবে নেহা এবং জ্যোতি ও তাদের গ্রাম কীভাবে এইসব ভ্রান্ত ধারণা, স্টিরিওটাইপ ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সাহস ও সঠিক মনোভাব দেখিয়েছে।’